মুহাম্মাদ (সা.) শুধু নীতিকথা বলেননি, বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন : কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, রাত ১২:০০
শায়খ আহমাদুল্লাহ
পৃথিবীতে বহু রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, যারা কেবল থিওরি দিয়ে গেছেন; জীবনে কখনো রাষ্ট্র পরিচালনা করেননি। একটা আদর্শ রাষ্ট্রের রোল মডেল কীরূপ হতে পারে নবী করিম (সা.) নিজে রাষ্ট্র চালিয়ে তা দেখিয়ে গেছেন। পিতা হিসাবে সন্তানের প্রতি কর্তব্য কী, শুধু বলে যাননি, একজন আদর্শ পিতার বাস্তব নমুনা হয়ে পৃথিবীবাসীকে শিক্ষা দিয়েছেন। তাই শুধু অন্যকে নীতিবাক্য শোনানো নয়, নিজের জীবনে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
গতকাল (১০ সেপ্টেম্বর, বুধবার) কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুন্নাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)’ শীর্ষক সীরাত সেমিনার ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নন্দিত আলোচক, প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব, দাঈ ও লেখক শায়খ আহমাদুল্লাহ। অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচনায় শায়খ আহমাদুল্লাহ এসব কথা বলেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, আজকের পৃথিবীতে মানবাধিকার, নারী অধিকার নিয়ে কথা বলা অনেকটা ফ্যাশনের মতো। অথচ মহানবী (সা.) যেই সময় নারী অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন, সেই সময় কন্যাসন্তান জন্ম নিলে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। কন্যাসন্তান জন্মের দায়ে বাবা সমাজ থেকে মুখ লুকিয়ে বেড়াত।
এছাড়াও তিনি বর্তমান পৃথিবীর বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নবীজির সীরাত থেকে সমাধানের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজকের পৃথিবী যখন পরিবেশ সচেতনতার কথা বলছে, নবী করিম (সা.) এ কথা আরো সাড়ে চৌদ্দশ বছর আগেই বলেছেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যদি কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যায় আর তোমাদের কারো হাতে একটি খেজুরের চারা থাকে, তবে কিয়ামত শুরু হওয়ার আগে যদি সে তা রোপণ করতে সক্ষম হয়, তবে যেন সে তা রোপণ করে দেয়।’
দারিদ্র বিমোচন, যানজট, খাদ্য সচেতনতা, শ্রমিকের অধিকার, রাষ্ট্রের কারসাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, বৈষম্য-বর্ণবাদসহ পৃথিবীর নানাবিধ সংকট সমাধানে রাসুল (সা.)-এর উদ্যোগ, অবদান ও আজকের পৃথিবীর করণীয় নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ ঘন্টাব্যাপী আলোচনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতা, শৃঙ্খলাবোধ ও নবীজির (সা.) সীরাত চর্চার আগ্রহ দেখে শায়খ আহমাদুল্লাহ মুগ্ধ হোন। তবে হৃদয় থেকে গভীরভাবে একটি শূন্যতাও অনুভব করেন। সেটা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক বরেণ্য প্রফেসর ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহর নামে একটি অ্যাকাডেমিক কিংবা আবাসিক হল না থাকার শূন্যতা। স্যারের নামে একটি হল করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টও করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য ড. এম. এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। সভাপতিত্ব করেন,সীরাতুন নবী (সা.) উদযাপন কমিটির আহবায়ক, ধর্মতত্ব ও ইসলামী শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.আ.ব.ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী।