ফেসবুক থেকে | নববর্ষ

videocard
হিজরি নববর্ষ ১৪৪৭

অনেকটা নিঃশব্দে নতুন আরেকটি হিজরি বছরে প্রবেশ করেছি আমরা। হিজরি বছর শুধুই একটি সন নয়, এর সঙ্গে মিশে আছে হিজরত, আত্মত্যাগ ও ঈমান রক্ষার এক ঐশী চেতনা। হিজরি পঞ্জিকার সাথে জড়িয়ে আছে হিজরতের স্মৃতি। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবিরা ঈমানকে সুরক্ষিত করতে জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। একই উদ্দেশ্যে ইবরাহিম (আ.) ইরাক থেকে ফিলিস্তিন ও মিশরে, ইউসুফ (আ.) কারাগারে, আসহাবে কাহাফের যুবকেরা গুহায় আত্মগোপন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ নবী-রাসুলের জীবনের বিরাট জায়গা জুড়ে আছে হিজরতের বেদনাবিধূর ও প্রেরণাদীপ্ত অধ্যায়। দুঃখের ইতিহাস সবাই ভুলে থাকতে চায়, সুখের স্মৃতি বারবার স্মরণ করে আনন্দ পায়। খ্রিস্টানরা তাই ঈসা (আ.)-এর জন্মসাল থেকে খ্রিস্টীয় সন গণনা শুরু করেছে। সাহাবিগণ করেছেন তার উল্টো। তারা হিজরতের মতো বেদনাদায়ক ঘটনা থেকে হিজরি সন গণনা আরম্ভ করেছেন। কারণ, সেই ত্যাগই মুসলিমদের পরবর্তী উত্থানের পটভূমি তৈরি করেছে। যুগে যুগে মুসলিমরা যেন হিজরতের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দীন ও ঈমান রক্ষার সংগ্রামে সর্বাত্মক ত্যাগ ও সেক্রিফাইস করে, তবেই সাফল্য তাদের পদচুম্বন করবে। প্রতি বছর হিজরি সন সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও ত্যাগের এই শিক্ষা থেকে আমরা যোজন যোজন দূরে সরে এসেছি। ঈমান রক্ষার জন্য নবী-রাসুলগণ প্রতিকূল পরিবেশ ত্যাগ করে অনুকূল পরিবেশে হিজরত করেছেন। আর আমরা একটুখানি বৈষয়িক সাফল্যের আশায় ঈমানের জন্য প্রতিকূল জীবন বেছে নিচ্ছি। হিজরতের চেতনা ধারণ শুধু পরকালীন সাফল্যেরই পূর্বশর্ত নয়, ইহকালীন সফলতারও মূলসূত্র। আগামীর পৃথিবী সংগ্রাম ও সংঘাতের পৃথিবী। আগামীর পৃথিবী যুদ্ধের পৃথিবী। চলমান এই নাজুক পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিজরতের চেতনা হতে পারে সবর ও দৃঢ়তার এক মজবুত হাতিয়ার।

আরও পড়ুন

videocard
থার্টি ফার্স্ট নাইট এখন আতঙ্কের নাম

থার্টি ফার্স্ট নাইট এখন এক আতঙ্কের নাম হয়ে গেছে নগরবাসীর জীবনে।যে আগুন এক মুহূর্তে ছাই করে দিতে পারে আমাদের সম্পদ, জীবন এবং সাজানো সংসার; সেই আগুন হয়ে উঠেছে আমাদের বর্ষবরণের প্রধান উপকরণ।একটা প্রজন্ম কতটা উন্মাদ, অবিবেচক, উচ্ছৃঙ্খল হলে আগুন আর পটকা নিয়ে উৎসব করতে পারে!গত দুই বছরে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উন্মত্ততা যেন লাগামছাড়া হয়ে গেছে। উল্লাসকারীদের পটকার আওয়াজে একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়ার ঘটনা এখনো আমাদের হৃদয় রক্তাক্ত করে। সর্বস্ব দিয়ে গড়ে তোলা সেই দরিদ্র নারী উদ্যোক্তা, ফানুসের আগুনে যার প্লাস্টিক কারখানা সম্পূর্ণ ভস্ম হয়ে গিয়েছিল, তার কথা ভেবে এখনো আমরা বিষণ্ন হই।একটু ভাবুন, নিহত ওই শিশুটি যদি আপনার সন্তান হতো! নিংস্ব ওই নারীটি যদি হতো আপনার বোন! বিগত দিনের এইসব ভয়াবহ দুর্ঘটনাগুলোর কথা চিন্তা করে হলেও আমাদের ‘আগুন নিয়ে খেলা’ বন্ধ করা উচিত।যে শহরে জালের মতো ছড়িয়ে আছে বৈদ্যুতিক তার, সেই শহরের যুবকেরা যখন ফানুসের নামে টাকা পোড়ায়, তাদের বুক কি একটুও কেঁপে ওঠে না দুর্ঘটনার শঙ্কায়!আমরা জীববৈচিত্র্যের কথা বলি। প্রকৃতির শোভা বর্ধনে পাখিদের অবদানের কথা বলি৷ অথচ উৎসবের নামে অযৌক্তিক এই উন্মাদনার কারণে যে আমাদের পরিবেশ ও প্রাণীবৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, তার বেলায় আমরা কেন চুপ!নতুন বছরের আগমন যদি আনন্দের কারণ হয়, তবে পুরনো বছরের বিদায় বেদনার কারণ হওয়া উচিত। নববর্ষে যারা আনন্দ উদযাপন করে, হারিয়ে ফেলা বছরটির জন্য তারা কি কখনো বেদনা অনুভব করে?মানুষকে আল্লাহ বিবেক দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। বিবেকসম্পন্ন মানুষের পাশবিক উন্মাদনায় পাখিরা যদি আতঙ্কে ডানা ঝাপটায়, রাস্তার কুকুর যদি দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে ভয়ে, গরিবের মাথাগোঁজার আশ্রয় যদি ছাই হয় ফানুসের আগুনে, পটকার বিকট শব্দ যদি খালি করে মায়ের কোল, তবে মানুষ তোমার শ্রেষ্ঠত্ব রইল কোথায়!

আরও পড়ুন

videocard
শব্দসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন

শব্দসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন। উম্মাদনায় লিপ্ত বিবেক-বিবেচনাহীন উছৃঙ্খল তরুণদের থামাতে প্রতিটি সমাজ থেকে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিন। তাদের কাউন্সেলিং করুন। প্রয়োজনে আপনার অভিযোগ ৯৯৯-এ ফোন করে জানান। এতে গুটিকয় উছৃঙ্খল তরুণের উম্মাদনা ও বুনো উল্লাসে দেশের মানুষ কতটা অতিষ্ঠ, সেটা প্রশাসন আরো ভালোভাবে আঁচ করবে।ধর্ম, রাজনীতি কিংবা বিয়ে-বিনোদন—যে নামেই হোক, মানুষকে অতিষ্ঠ করে, এমন বিকট আওয়াজ সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য।

আরও পড়ুন