আফ্রিকায় দাওয়াতি সফরে শায়খ আহমাদুল্লাহ
২০ আগস্ট, ২০২৫, রাত ১২:০০
শায়খ আহমাদুল্লাহ
কেনিয়া ও উগান্ডা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমন্ত্রণে জনপ্রিয় ইসলামিক আলোচক ও দাঈ শায়খ আহমাদুল্লাহ আফ্রিকা সফর করে দেশে ফিরেছেন। ৮ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট দশ দিনের এই সফরে শায়খ আহমাদুল্লাহ আফ্রিকার উগান্ডা ও কেনিয়ায় বেশ কয়েকটি দাওয়াতি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন।

৮ আগস্ট ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স যোগে শায়খ আহমাদুল্লাহ বাংলাদেশ থেকে কেনিয়া হয়ে উগান্ডায় পৌঁছান। যাত্রাপথে কেনিয়ার নাইরোবিয়ার বিমানবন্দরে স্বজনহীন নিঃসঙ্গ কফিনে ভরা এক প্রবাসীর লাশ দেখে জীবনের করুণ বাস্তবতা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন এক পোস্টও করেন এ বিষয়ে।

১০ আগস্ট উগান্ডার বাংলাদেশ কমিউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক ইসলামিক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বিদেশে আপনারা নিজ দেশ—বাংলাদেশ ও ইসলাম—উভয়েরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাই আচার-আচরণ, সততা ও কাজে দায়িত্ববান হওয়ার মাধ্যমে দেশ ও দ্বীনের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারে প্রবাসীদের বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন এবং সবাইকে মিলেমিশে থাকার আহ্বান জানান।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের আরেক সুবক্তা আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জনাব আব্দুল জব্বার।
এছাড়া তিনি উগান্ডার একটি মাদরাসা, বেশ কিছু মসজিদ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। মাদরাসার পরিবেশ, শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের কুরআন তেলাওয়াতে অভিভূত হন। উগান্ডার গ্রামীণ জনপদেও তিনি সময় কাটান এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করেন।

দাওয়াতি কার্যক্রমের পাশাপাশি শায়খ আহমাদুল্লাহ উগান্ডার প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করেন। কুরআন-হাদিসে বর্ণিত ও পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীগুলির মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক নীলনদের উৎসমুখ, কালাগালা জলপ্রপাত এবং পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত ইকুয়েটর বা বিষুবরেখা পরিদর্শন করেন।

উগান্ডার মানুষদের সহজ-সরল জীবনযাপন ও শৃঙ্খলাবোধ শায়খ আহমাদুল্লাহকে অভিভূত করে। দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষত স্বর্ণের প্রাচুর্যের কথা উল্লেখ করে তিনি পশ্চিমাদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে আল্লাহর কাছে দেশটির হেফাজত কামনা করেন এবং উগান্ডাকে দ্বীনের জন্য কবুল করে নেওয়ার দোয়া করেন।
উগান্ডা সফর শেষে শায়খ আহমাদুল্লাহ কেনিয়ায় গমন করেন। কেনিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা মোম্বাসায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক মিলনমেলায় বক্তব্য প্রদান করেন এবং উপস্থিত শ্রোতাদের জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানে প্রবাসী শিশুদের কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত, ইসলামিক নাশিদ ও দেশাত্মবোধক সংগীতও পরিবেশন করা হয়।

কেনিয়াতেও তিনি একটি মাদরাসা পরিদর্শন করেন। এছাড়া নাইরোবিয়াতে বেশ কয়েকটি মসজিদ পরিদর্শন এবং সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা অবলোকন করার চেষ্টা করেন। কেনিয়া সফরে তিনি আল্লাহ তায়ালার অপরূপ সৃষ্টি আফ্রিকার বিখ্যাত জঙ্গল মাসাই মারাও সফর করেন।

আফ্রিকা সফরের অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ এবং উপলব্ধির আলোকে শিগগিরই একটি সফরনামা লিখবেন বলে জানিয়েছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। সফরনামায় আফ্রিকার মানুষে জীবন, সংস্কৃতি, ধর্ম পালন ও ঐতিহাসিক স্থানসমূহের বিস্তারিত বিবরণ থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।